নাছির উদ্দিন|| ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার আইয়ুবপুর ইউনিয়নের নগরীরচর কান্দাপাড়া গ্রামে অবস্থিত ভিলেজ ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়।
সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করছে “ভিলেজ ফাউন্ডেশন”। ২০২১ সালের ৬ জুন প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনটি তার স্লোগান “শিক্ষা, শান্তি ও মানবতার কল্যাণে আগামীর পথে” ধারণ করে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কয়েকজন উদ্যমী তরুণের হাত ধরে যাত্রা শুরু করা এই সংগঠনটি মাত্র তিন বছরের মধ্যেই সামাজিক উন্নয়নে অসাধারণ ভূমিকা পালন করে সবার নজর কেড়েছে।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবেশে অগ্রণী ভূমিকা প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ভিলেজ ফাউন্ডেশন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে কাজ করে চলেছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ এবং জিপিএ ৫ প্রাপ্ত কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা প্রদানের মাধ্যমে তাদের অনুপ্রাণিত করেছে।
স্বাস্থ্য সেবায় সংগঠনটি ব্যতিক্রমী নজির স্থাপন করেছে। এখন পর্যন্ত সংগঠনটি ১০,০০০ মানুষকে স্বাস্থ্য সেবা দিয়েছে, বিশেষত হেলথ ক্যাম্প আয়োজনের মাধ্যমে। এছাড়া সংগঠনের পরিচালিত স্বেচ্ছাসেবী ব্লাড ব্যাংক নিয়মিত রক্তদান কার্যক্রম পরিচালনা করে জীবন বাঁচানোর কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
পরিবেশ সংরক্ষণেও ভিলেজ ফাউন্ডেশন অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। গত তিন বছরে সংগঠনটি প্রায় ১০,০০০ ফলজ ও ঔষধি গাছ রোপণ করেছে, যা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। এর স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৩ সালে সংগঠনটি অর্জন করেছে “পরিবেশপ্রেমী অ্যাওয়ার্ড”।
দুর্যোগ মুহূর্তে মানুষের পাশে ভিলেজ ফাউন্ডেশন শুধু উন্নয়নমূলক কাজেই সীমাবদ্ধ নয়, দেশের যেকোনো দুর্যোগ মুহূর্তেও মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। ২০২২ সালে সিলেট ও সুনামগঞ্জ অঞ্চলের বন্যাকবলিত মানুষকে সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি সর্বশেষ ২০২৪ সালে নোয়াখালী, ফেনী ও কুমিল্লার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্য কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।
সরকারি স্বীকৃতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সংগঠনটি ২০২২ সালে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন লাভ করে, যা তাদের কাজের প্রতি সরকারের আস্থা ও স্বীকৃতি প্রকাশ করে। সংগঠনের সভাপতি সাজ্জাদ আহমেদ বলেছেন, “টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ভিলেজ ফাউন্ডেশন সবসময় সমাজকল্যাণমূলক কাজ করে যাবে।”
সমাজে আলোর পথিকৃৎ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ এবং মানবতার কল্যাণে নিরলস কাজ করে ভিলেজ ফাউন্ডেশন একটি উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। এই সংগঠনের কার্যক্রম প্রমাণ করেছে, মানবতার সেবায় নিবেদিতপ্রাণ কিছু তরুণ কীভাবে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।
ভবিষ্যতে ভিলেজ ফাউন্ডেশনের এমন উদ্যমী কার্যক্রম সমাজে আরও আলো ছড়াবে এমন প্রত্যাশাই সবার।
Leave a Reply